কালিজিরার ঔষধি গুনাগুন ও স্বাস্থ্যগুণ সর্ম্পকে জানুন
প্রাচীনকাল থেকেই কালিজিরা মানবদেহের নানান রোগের প্রতিষেধক ও প্রতিরোধক হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। অনেকে এ জন্যই কিলিজিরাকে কালিহিরা বলেন। মাথাব্যথা, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গেব্যথা থেকে উপশম পেতে কালিজিরার তেল দারুন উপকারি। কালিজিরার তেল কপালে মালিশ করলে এবং খালি পেটে ১ চা চামচ করে ৩ দিন খেলে আরোগ্য লাভ করা যায়।
যেহেতু কালিজিরার স্বাস্থ্যগুণ ও ঔষধি গুনাগুন সম্পর্কে তেমন কিছু জানেন না। কালিজিরার স্বাস্থ্যগুণ ও ঔষধি গুনাগুন সর্ম্পকে সবার ভালো জ্ঞান রাখা জরুরি। কালিজিরা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো তাই কালিজিরার স্বাস্থ্যগুণ ও ঔষধি গুনাগুন সম্পর্কে জানতে পুরো আার্টকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
পোস্ট সুচিপত্রঃ কালিজিরার ঔষধি গুনাগুন ও স্বাস্থ্যগুণ
কালিজিরার ঔষধি গুনাগুন ও স্বাস্থ্যগুণ সর্ম্পকে বিস্তারিত
কালিজিরার বৈজ্ঞানিক নাম
কালিজিরা Ranunculaceae বংশভূত উদ্ভিদ এর বৈজ্ঞানিক নাম Nigella Sativa। অঞ্চল ভেদে কালিজিরার বেশ কিছু নামের পরিচিত আছে। যেমন- কালঞ্জি, রোমান ধনে, কালো কেওড়া, নিজেলা আরও ইত্যাদি। কালোজিরা প্রায় ২০০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ঔষুধি হিসাবে ব্যবহার হয়ে আসছে।
কালিজিরার ঔষধি গুনাগুন
কালিজিরাকে আমারা কে না জানি। মসলা হিসাবে কালিজিরার চাহিদা অনেক তবে নামে কালিজিরা হলেও আসলে কিন্তু স্বাদে গন্ধে জিরার সাথে এর কোন মিল নেই। আবার এর ব্যবহারও জিরার মত না। কালিজিরা পাঁচফোড়ত সহ বিভিন্ন রকম তরকারি, নানা রকম ভর্তায়, সিংগাড়ায় ব্যবহৃত হয় আবার কালিজিরারও ভর্তা হয়।
প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদিক উইনানি ও কবিরাজি চিকিৎসাতে কালিজিরা ভেষজি ঔষধি হিসাবে ব্যবহার হয়ে আসছে। এর বীজ থেকে তেল তৈরি করা হয়, যা মানবদেহের জন্য খুব উপকারি। কালিজিরায় রয়েছে ফসফরাস, লৌহ, ফসপেট। তাছাড়া রয়েছে ক্যান্সার প্রতিরোধক কেরটিন ও বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধকারি উপাদান এবং অম্লরোগের প্রতিষেধক। আসুন জেনে নেয়া যাক কালিজিরার কিছু ঔষিধি গুনাগুন।
- মাথাব্যথা, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গেব্যথা থেকে উপশম পেতে কালিজিরার তেল দারুন উপকারি। কালিজিরার তেল কপালে মালিশ করলে এবং খালি পেটে ১ চা চামচ করে ৩ দিন সেবনে আরোগ্য লাভ করা যায়।
- চুলে শ্যাম্পু করার পর ভালোভাবে শুকিয়ে নিন এবার পুরো মাথায় কালিজিরার তেল ভালোমতো লাগান। নিয়মিত এক সপ্তাহ ব্যবহার করলে চুলপড়া অনেক কমে যাবে।
আরও পড়ুন:
- যাদের হাঁপানিরজনিত রোগ সমস্যা আছে তারা বুকে ও পিঠে কালিজিরার তেল প্রতিদিন নিয়মিত মালিশ করতে পারেন অনেক উপকার পাবেন।
- যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা আছে তারা এক চিমটি পরিমাণ কালিজিরা একগ্লাস পানির সঙ্গে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে নিয়মিত সেবন করুন, রক্তে গ্লুকোরাজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে ও ডায়াবেটিস কমে যাবে।
- প্রতিদিন নিয়মিত কালিজিরার তেল গরম পানি বা চায়ের সাথে মিশিয়ে পান করলে হৃদরোগে যেমন উপকার পাওয়া যায় তেমনি শরীরের বাড়তি মেদও কমে।
- ১ চা চামচ কালিজিরা তেল ও ১ কাপ দুধ একসাথে মিশিয়ে প্রতিদিন নিয়মিত সেবন করুন, পেটে গ্যাসট্রিক বা এসিডিটির সমস্যা থাকলে তা কমে যাবে।
- উচ্চ রক্তচাপ যাদের আছে তারা প্রতিদিন নিয়মিত কালিজিরা সেবন করুন, কালিজিরা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে আবার গরম ভাতের সাথেও কালিজিরার ভর্তা খেতে পারেন।
- জ্বর, ব্যথা, সর্দি-কাশিতে ১ চা চামচ কালিজিরার সঙ্গে ৩ চা চামচ মধু ও ২ চা চামচ তুলসী পাতার রস মিশেয়ে প্রতিদিন দুইবার সেবন করুন। কালিজিরা বেটে কপালে প্রলেপ দিন যদি সর্দি বসে যায়। একই সঙ্গে পাতলা পরিষ্কার কাপড়ে কালিজারা বেঁধে শুঁকতে থাকুন, শ্লেষ্মা তরল হয়ে ঝরে যাবে তাড়াতাড়ি ভালো ফল পেতে বুকে-পিঠে কালিজিরার তেল মালিশ করুন।
- হাটুর ব্যথা ও বাতের ব্যথা নিরাময়ে প্রতিদিন রাতে কালিজিরার তেল মালিশ করুন, হাটুর ব্যথা ও বাতের ব্যথা কমে যাবে।
- কালিজিরা নারী-পুরুষ উভয়ের যৌন ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে, বিশেষ করে পুরুষদের জন্য খুব উপকারি। ১৫/১৬ টি কালিজিরা ছোট ১টি পিঁয়াজ ও ২ চা চামচ মধু সহ বিকালে/রাতে সেবন করলে চির যৌবন রক্ষ হয়।
- নিয়মিত কালিজিরা খান, এটি মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বাড়িয়ে দেয়, যার দারুন স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পায় ও এর সঙ্গে প্রাণশক্তি বাড়ায় ও ক্লান্তি দূর করে।
- পক্ষাঘাত (প্যারালইসিস) ও কম্পনজনিত সমস্যায় কালিজিরার তেল মালিশ করলে আশ্চর্যজনক ফল পাওয়া যায়।
- কালিজিরা নবজাতক শিশুর মায়েদের জন্য খুব উপকারি উপাদান। স্তনে দুদ্ধ না আসলে বা কমে গেলে কালিজিরার ভর্তা করে করে নিয়মিত খেলে স্তনে দুদ্ধ আশা শুরু হয় ও স্তনের দুদ্ধ বৃদ্ধি করে।
কালিজিরার স্বাস্থ্যগুণ
কালিজিরাতে প্রায় শতাধিক পুষ্টিগুণ ও উপকারি উপাদান রয়েছে, যা নিয়মিত খাদ্যাভাসের ফলে মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাহিয়ে তুলে ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কালিজিরা ফুল ফোটে ফেব্রুয়ারী-মার্চ মাসে, মৌমাছিরা তখন এর নেক্টার সংগ্রহ করে। এই মধুতে প্রচুর পরিমাণে অ্যাস্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও খনিজ রয়েছে। কালিজিরা ফুলের মধু উৎকৃষ্ট মধু হিসাবে বিশ্বব্যাপী বিবেচিত।
কালিজিরা তৈল মানবদেহের জন্য অত্যান্ত উপকারী। ঔষধ হিসাবে কালিজিরার ক্যাপসুল পাওয়া যায় বাজারে। কালিজিরায় রয়েছে ক্যান্সার প্রতিরোধক ক্যারোটিন ও শক্তিশালী হরমোন, প্রস্রাবের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধকারী উপদান, পাচক এনজাইম ও অম্লানাশক উপাদান এবং অম্লারোগের প্রতিষেধক।
প্রধান উপাদানের মধ্যে আমিষ ২১ শতাংশ, শর্করা ৩৮ শতাংশ, ভেষজ তেল ও চর্বি ৩৫ শতাংশ। এছাড়াও ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ আছে। প্রতিগ্রাম কালিজিরার পুষ্টি উপাদান হল প্রোটিন ২০৮ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন বি১ ১৫ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ১.৮৫ মাইক্রোগ্রাম, আয়রন ১০৫ মাইক্রোগ্রাম, ফসপরাস ৫.২৬ মিলিগ্রাম, জিংক ৬০ মাইক্রোগ্রাম, নিয়ানিস ৫৭ মাইক্রোগ্রাম, কপার ১৮ মাইক্রোগ্রাম, ফলাসিন ৬১০ আইউ।
অন্যতম আরও কিছু উপাদান রয়েছে, থাইমোকিনোন, নাইজেলোন ও তেল। কালিজিরার তেলে রয়েছে অলিক এসিড, লিনোলিক এসিড, ফসফরাস, লৌহ, আয়রন, ফসফরাস, পটাশিয়াম, কার্বোহাইড্রেট, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক, সেলেনিয়াম, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-বি, ভিটমিন-বি২, ভিটামিন-সি ও নিয়াসিন ছাড়াও জীবাণুনাশক নানান উপাদান।
কালিজিরার বিশেষত্ব
কালিজিরা বিশেষত্ব হলো এটি মানবদেহের জন্য খুব উপকারী একটি ভেষজ উপাদান, যা বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। কালিজিরা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, হজম শক্তি বাড়িয়ে তোলে, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে,হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়,ত্বকের সুস্বাস্থ্য ও সুন্দর্য বজায় রাখে। কালিজিরার তেল আর্থাইটিস ও পেশির ব্যথাজতিন সমস্যায় বেশ কার্যকরি।
পেটের পীড়া সহ যাবতীয় রোগ-জীবাণু গ্যাসট্রিক ও এসিডিটি দূর করে, কৃমি দূর করে, অনিদ্রা দূর করে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া নিধন করে, মানবদেহের মৃত কোষ দূর করে নতুন কোষ-কলার তৈরি করে ও বৃদ্ধিতে করতে সহায়তা করে। শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা দূর করে, রিউমেটিক ফিভার, পিঠব্যথা, বাতের ব্যথা দূর করে, স্মরণশক্তি বৃদ্ধি ও মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালন নিয়ন্ত্রনে সাহায্য করে।
গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (ইফাঃ)/অধ্যায়ঃ ৬৩/চিকিৎসা, পরিচ্ছদঃ.২২৭৮
৫২৮৫। আবদুল্লাহ ইবনু আবূ শায়বা (রাহঃ)... খালিদ ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকেত বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার (যুদ্ধের উদ্দেশ্যে) বের হলাম। আামদের সংগে ছিলেন গালিব ইবনু আবযার। তিনি পথে অনুস্থ হয়ে পড়লেন। আমার মদিনায় পৌছালাম তখনও তিনি অসুস্থ ছিলেন। তাঁকে দেখাশোনা করতে আসেন ইবনু আবূ আতীক (রাঃ)।
তিনি আমাদের বললেনঃ তোমরা এই কালিজিরা সংগে রেখো। এ থেকে পাঁচতি কিংবা সাতটি দানা নিয়ে পিষে খাবে, পারপর তন্মধ্যে যায়তুনের কয়েক ফোটা তৈল ঢেলে দিয়ে তার নাকের এদিক-ওদিকের ছিদ্র পথে ফোট ফোট কারে ঢুকিয়ে দেবে। কেননা আয়িমা (রাঃ) আমাদের নিকতট বর্ণনা করেছেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেনঃ এই কালিজিরা ‘সাম’ ব্যতিত সকল রোগের ঔষধ। আমি বললামঃ সাম- কি? তিনি বললেনঃ সাম- অর্থ হলো মৃত্যু।
আরও পড়ুন:
তিরমিয়ী, বুখারী, মুসলিম থেকে নেয়া- হযরত কাতাদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, “প্রতিদিন ২১ টি কালিজিরার ১ টি পুটলি তৈরি করে পানিতে ভিজাবে এবং পুটলির পানির ফোঁটা এ নিয়মে নাশারন্দ্রে (নাশিকা, নাক) ব্যবহার বরবে- “প্রথম বার ডান নাকেরছিদ্রে ২ ফোঁটা এবং নাম নাকের ছিদ্রে ১ ফোঁটা। দ্বিতীয়বার বাম নাকের ছিদ্রে ২ ফোঁটা এবং ডাক নাকের ছিদ্রে ১ ফোঁটা। তূতীয়বার ডান নাকের ছিদ্রে ২ ফোঁটা ও বাম নরাকের ছিদ্রে ১ ফোঁটা।”
হযরত আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত “নবী করীম (সাঃ) এরশাদ করেন, যখন কোন রোগ-যন্ত্রণা খুব বেশী কষ্টদায়ক হবে তখন এক চিমটি পরিমাণ কালিজিরা নিয়ে খাবে এরপর পানি ও মধু খাবে।” -মুজামুল আওসাতঃ তাবরানী।
কালিজিরা সব রোগের মহা ঔষধ হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়। অন্যান্য সব ভেষজের মতো কালিজিরা নিয়েও গবেষণা করা হয়েছে। ১৯৬০ সালে মিসরের গবেষকরা নিশ্চিত হন যে, কালিজিরায় বিদ্যমান নাইজেলনের কারণে হাঁপানি উপশম হয়।
একদল জার্মানির গবেষকরা কালিজিরা নিয়ে গবেষণা করে বলেন, কালিজিরায় অ্যান্টিব্যাকরেটিয়াল ও অ্যান্টিমাইকোটিক বৈশিষ্ট্য প্রভাব রয়েছে। বোনম্যারো ও প্রতিরোক্ষা কোষগুলোকে তাজা ও উত্তেজিত করে এবং ইন্টাফেরন তৈরির প্রভাব বাড়িয়ে দেয়। কালিজিরার টিউমা বিরোধী প্রভাব সম্পর্কে আমেরিকার গবেষকরা প্রথম মতামত দেন। কালিজিরা মানবদেহে ক্যান্সার উৎপাদনকারী ফ্রি-রেজিক্যাল অপসারিত করতে পারে।
শ্বাসকষ্টে কালিজিরার উপকারিতা
শ্বাসকষ্টের সমস্যা হঠাৎ মুশকিলে ফেলতে পারে। সব সময় চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার অবস্থা থাকে না। অনেক সময় হাতের কাছে দরকারি ঔষুধও থাকে না। এমতাবস্থায় কালিজিরা কাপড়ে জড়িয়ে রাখুন, এবার নাকের কাছে নিয়ে গন্ধ শুকুতে থাকুন। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা থেকে সাময়িক মুক্তি দিতে পারে এই ঘরোয়া উপায়।
ওজন কমাতে কালিজিরা
কালিজিরা টানা ৩ মাস সেবন করলে অনেকটাই ওজন কমে যাবে। পেটের জমে থাকা চর্বি বা মেদ কমবে। কালিজিরা শরীরে জমে থাকা চর্বি গলিয়ে তা মল ও মূত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে বের করে দিতে সাহায্য করে থাকে। ফলে কিছু দিনের মধ্যেই আকাঙ্খিত চেহারা পাওয়া যায়। কালিজিরা মূত্রবর্ধক প্রভাবের কারণে এর নিয়মিত ব্যবহারে ওজন কমাতে সহায়ক প্রমাণিথ হয়েছে নানান গবেষণায়।
পেটের জন্য কালিজিরা উপকারি
হজমের সমস্যা দূর করতে নিয়মিত ১-২ চা চামচ কালিজিরা ভালো করে শিলপাটায় বেটে ১ গ্লাস পানির সঙ্গে গুলিয়ে সেবন করতে থাকুন প্রতিদিন ২-৩ বার। এভাবে সেবন করলে এক মাসের মধ্যে পেটের সমস্যা দূর হবে ও হজমশক্তি বাড়বে। পাশাপাশি পেট ফাঁপা, গ্যাসট্রিক ও এসিডিটি ভাব কমে যাবে। কৃমিনাশক, যকৃতের বিষক্রিয়ানাশক ও রক্তের স্বাভাবিকতা রক্ষাকারক হিসাবেও কাজ করে।
কালিজিরায় ফাইবার ও বিভিন্ন উপাদান থাকে যা, হজমক্রিয়া উন্নত করে এবং লিভারের কার্যকারিতার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। কালিজিরা লিভার ক্যান্সারের জন্য দায়ী আফলাটক্সিন নামক বিষ ধ্বংস করে। কোষ্ঠকাঠিন্যতা কমায় ও পাকস্থীল আলসারজনিত সমস্যা দূর করে।
কালিজিরা নিয়মিত সেবনে শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে সতেজ ও সার্বিকভাবে স্বাস্থ্যর উন্নতি সাধন করে। অরুচি, পেটব্যথা, ডায়রিয়া, আমশয়, জন্ডিস, জ্বর, শরীর ব্যথা, গলা ও দাঁতের ব্যথা, পুরাতন মাথাব্যথা, মাইগ্রেন, চলপড়া, খোসপঁচড়া, শ্বেতি, দাদ, একজিমা, সর্দি-কাশি, হাঁপানিও কালিজিরা অব্যর্থ ঔষধ হিসাবে কাজ করে।
নানান কাজের কাজী কালিজিরা
ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা হলে গলা ও বুকে কালিজিরা তেল মালিশ করতে পারেন তাতে আরাম পাবেন। তাছাড়া মানবদেহের যেকোন আঘাতজনিত ব্যথায় কালিজিরা তেল বেশ উপকারি। দীর্ঘমেয়াদি মাথার যন্ত্রণা বা মাইগ্রেনের সমস্যায় কালিজিরা তেল নিয়মিত ভাবে কপালে মালিশ করলে অনেক টাই আরাম পাওয়া যায়। প্রচুর পরিমাণে ফসফরাস রয়েছে কালিজিরায়, যা মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। জীবাণুর সংক্রমণ প্রতিরাধ করতে নিয়মিত কালিজিরা সেবন করুন।
কালিজিরা ব্যবহারের সর্তকতা
কালিজিরা নিয়মিত ও পরিমিত হারে সেবন করতে হবে। দীর্ঘদিন কালিজিরা সেবনে নানা সমস্যা লক্ষ্য করা যায়। তন্মধ্যে প্রদাহ, পাকস্থলীর সংকোচন, বুক জ্বলা ও বমন ভাব হতে পারে। বিশেষ করে নিয়মিত তিন মাসের অধিক সময় ধরে যারা সেবন করে যাচ্ছে। অতিরিক্ত খুব বেশি সেবন করলে হিতের বিপরীত হতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত গর্ভবতী নারীদের কালিজিরা সেবন করা ঠিক নাF। এতেকরে গর্ভপাত হতে পারে অথবা গর্ভে থাকা নবজাতক শিশুর মারাত্মক সমস্যা হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ
কালিজিরার ঔষধি গুনাগুন ও স্বাস্থ্যগুণ সর্ম্পকে লেখকের মন্তব্য - শেষ কথাঃ
কালিজিরা প্রাচীনকাল থেকেই মানবদেহের বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক ও প্রতিরোধক হিসাবে ব্যবহার হয়ে আসছে। আয়ুর্বেদিক ও উইনানি চিকিৎসার জন্যও এর ব্যাপক ব্যবহার হয়ে থাকে। কালিজিরার বীজ থেকে তৈল তৈরি হয়, যা মানব শরীরের জন্য অত্যান্ত উপকারি। কালিজিরায় রয়েছে ফসফরাস, লৌহ, ফসপেট। তাছাড়া রয়েছে ক্যান্সার প্রতিরোধক কেরটিন ও বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধকারি উপাদান এবং অম্লরোগের প্রতিষেধক। তাই কালিজিরাকে মৃত্যু ব্যতীত সব রোগের মহা ঔষধ বলা হয়।
আশা করি আজকের পোস্টের মাধ্যমে কালিজিরার স্বাস্থ্যগুণ ও ঔষধি গুনাগুন সর্ম্পকে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষাপটে যদি কোন প্রশ্ন অথবা গুরুত্বপূর্ণ মতামত থেকে থাকে তাহলে আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন এবং সকল প্রকার তথ্য পেতে আমাদের সাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন।
kbfj24.com এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url